বাপাউবো এর ইতিহাস
১৯৫৪ এবং ১৯৫৫ সালের উপর্যপরি ভয়াবহ বন্যার পর বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানের লক্ষ্যে ১৯৫৭ সনে জাতিসংঘের অধীনে গঠিত ক্রগ মিশনএর সুপারিশক্রমে এতদঞ্চলের পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়নের লক্ষে ১৯৫৯ সনে পূর্ব পাকিস্তান পানি ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (ইপিওয়াপদা) গঠন করা হয়। বর্তমান বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) ইপিওয়াপদা এর পানি উইং হিসেবে দেশের বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে কৃষি ও মৎস্য সম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে দেশের পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনায় প্রধান সংস্থা হিসেবে কার্যক্রম আরম্ভ করে। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সনের মহামান্য রাষ্ট্রপতির আদেশ নং: ৫৯ মোতাবেক ইপিওয়াপদা এর পানি অংশ একই ম্যান্ডেন্ট নিয়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) সম্পূর্ণ স্বায়ত্বশাসিত সংস্থা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। অত:পর সংস্কার ও পুনর্গঠনের ধারাবাহিকতায় জাতীয় পানি নীতি-১৯৯৯ এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে বাপাউবো আইন, ২০০০ প্রণয়ন করা হয়। এ আইনের আওতায় মাননীয় মন্ত্রী, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এর নেতৃত্বে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট পানি পরিষদের মাধ্যমে বোর্ডের শীর্ষ নীতি নির্ধারণ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালিত হচ্ছে।
চট্টগ্রাম পওর বিভাগ-১
চট্টগ্রাম পওর বিভাগ-১, বাপাউবো, চট্টগ্রাম এর বিরাট অংশ উপকূলীয় এলাকার অর্ন্তভূক্ত। যার কারণে সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়, সাইক্লোন প্রায়শঃ অত্র অঞ্চলের ব্যাপক অংশে ক্ষতিসাধন করে। সমুদ্রের অসীম শক্তির সাথে লড়াই করা ব্যয়বহুল এবং সময় সাপেক্ষ। এছাড়া অত্র অঞ্চলের উল্লেখযোগ্য নদী যেমন কর্ণফুলী, সাঙ্গু হল ফ্লাশি ও সর্পিলাকার প্রকৃতির নদী। নদীগুলো ফ্লাসি ও সাইনুসাইডাল হওয়ায় বর্ষায় অত্যন্ত ভয়ংকর, খরস্রোতা ও আগ্রাসী রুপ ধারন করে এবং প্রচুর পলি নিয়ে আসে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
সরকারের রূপকল্প-২০৪১ এর বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সাল নাগাদ একটি সমৃদ্ধ দেশের মর্যাদা অর্জন করার রোডম্যাপ সরকার গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০, SDGs, প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০৪১, ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার-২০১৮ প্রভৃতি বিবেচনায় নিয়ে উপকূলীয় এবং অ-উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য আলাদা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। SDGs এর ৩টি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে লীড, ১টি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কো-লীড এবং ২০টি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এসোসিয়েট হিসেবে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড দায়িত্ব পালন করছে। কর্ণফুলী ও সাঙ্গু-মাতামুহুরী নদী সিস্টেমের বেসিনভিত্তিক সমীক্ষা সম্পাদনের কাজ চলমান রয়েছে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিতে জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় উপকূলীয় পোল্ডারসমূহ পর্যায়ক্রমে পুনর্বাসন এবং শক্তিশালীকরণ করা হচ্ছে।
সাম্প্রতিক বছরসমূহের (৩ বছর) প্রধান অর্জনসমূহ
বন্যার ক্ষয়ক্ষতি হতে দেশের জনসাধারণের জানমাল রক্ষা ও খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নদী ভাঙ্গনরোধ, নদী ড্রেজিং, সেচ ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন, জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও ভূমি পুনঃরুদ্ধারের কাজ করছে। গত ৩ (তিন) বছরে চট্টগ্রাম পওর বিভাগ-১, বাপাউবো, চট্টগ্রাম এর অধীনে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ৫টি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে ৬টি প্রকল্পের বাস্তবায়ন সমাপ্ত করেছে এবং বর্তমানে ৫টি প্রকল্পের কাজ চলমান। প্রকল্পসমূহের আওতায় ২৭ কিঃমিঃ নদী তীর সংরক্ষণ, ৭ কিঃমিঃ বাঁধ নির্মাণ, ৫৬ কিঃমিঃ বাঁধ পুনরাকৃতিকরণ, ২৯.৩ কিঃমিঃ খাল পুনঃখনন এবং ৯ কিঃমিঃ নদী ড্রেজিং ও পুনঃখনন কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাপাউবো এর এ সকল কার্যক্রমের ফলে ফলে সারাদেশব্যাপী ০.৩২ লক্ষ হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা সম্প্রসারণ, ১.২৮ লক্ষ হেক্টর জমি বন্যামুক্তকরণসহ দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায় ০.৪০ লক্ষ হেক্টর আবাদী জমি লবণাক্ততা হতে রক্ষা করা হয়েছে।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS